নিউজ ডেস্ক ::
পবিত্র রমজান মাস সমাগত, তাই একদিকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বিভিন্ন মসজিদে খতমে তারাবিহ সহ নানান ধর্মীয় কর্মকান্ডের প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্যদিকে ব্যবসায়িরা রমজান মাসকে ঘিরে বেশ কিছু নিত্যপন্যের দাম বাড়ানোর তৎপরতা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বেড়েছে বেশ কিছু পন্যের দাম এবং সামনের দিনগুলোতে আরো দাম বাড়তে পারে বলে জানান চকরিয়াসহ কক্সবাজারের স্থানীয় ব্যবসায়িরা। তবে পাইকারী ব্যবসায়িরা বলছে ঢাকা চট্টগ্রামের ব্যবসায়িরা দাম বাড়ালে এখানেও দাম বাড়বে।
কক্সবাজার শহরের কালুর দোকান এলাকার করিম সওদাগরের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকরিয়া কাচাবাজার সড়কের একটি মুদির দোকানে ১দিনের ব্যবধানে ২২টাকা দামের পেয়াজ একলাফে বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫টাকা। কক্সবাজার সদরে এক সপ্তাহ আগেও পেয়াজের দাম ছিল ২৮ টাকা সেই পেয়াজ বর্তমানে ৩৫ টাকা, চিনির দাম সপ্তাহ দুএকের মধ্যে বেড়েছে ১০ টাকার মত। সে হিসাবে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা। অবশ্য চনা এখনো ৭২ টাকা এর খেসারীর ডাল ৪০ টাকার মধ্যে আছে। তবে যে কোন মুহুর্তে দাম বাড়তে পারে বলে জানান করিম সওদাগর। শহরের বাহারছড়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, অনেকে ইতিমধ্যে রোজার বাজার করতে শুরু করেছে। এ সময় ক্রেতা শফি আলম বলেন, রোজার দিন যত ঘনিয়ে আসবে ততই নিত্যপন্যের দাম বাড়বে। তাই আগে ভাগেই রোজার বাজার করে ফেলছি। আমি পিয়াজ, আদা, রসুন, চনা, খেসারী, চিনিসহ অনেক কিছু কিনেছি আর বাকি গুলো রোজার কাছাকাছি সময়ে কিনবো। এ সময় তরকারি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে রমজান মাসের সবচেয়ে বেশি চাহিদা পন্য কাচা মরিচের দাম এখনো হাতের নাগালে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, তবে খুব দ্রুত দাম বাড়তে পারে বলে জানান বিক্রেতা নবি আলম। তিনি জানান আমরা রামু, গর্জনিয়া সহ অনেক জায়গা থেকে মরিচ সহ তরকারি কিনে এনে বাজারে বিক্রি করি। তবে শুনেছি খুব দ্রুত কাচা মরিচ সহ অনেক তরকারির দাম বাড়তে পারে। অবশ্য দাম বাড়ার আরো কারণ আছে। এখন বৃস্টি হচ্ছে। তাই কৃষকের কাছে যেই মরিচ বা তরকারি আছে তাও নস্ট হয়ে যাবে। তাই কৃষকরা তড়িঘড়ি করে ফলন ঘরে তুলবে। আর বাজারে সংকট দেখা যেতে পারে। তাই পন্যের দাম বাড়তে পারে। টেকপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলী বলেন, আমিও রোজার অনেক বাজার করে ফেলেছি। কারন রোজা যতই সমাগত হয় নিত্যপন্যের দাম ততই বাড়ে। আমার মতে চলতি বছর মাছের দামও অনেক বাড়বে, কারন বাজারে ইতিমধ্যে মাছের সংকট দেখা যাচ্ছে। এদিকে বড় বাজার এলাকার ব্যবসায়ি জসিম উদ্দিন বলেন, প্রতি বছর রমজান আসলে কিছু কিছু নিত্যপন্যের দাম বাড়ে এর মধ্যে পেঁয়াজ, মরিচ অন্যতম। আর সবজির মধ্যে বেগুন সহ অনেক কিছু। তবে দাম বাড়ার বিষয়ে প্রশাসন সহ অনেকে স্থানীয় ব্যবসায়িদের অভিযোগ করে। আসলে কোন স্থানীয় ব্যবসায়িদের হাতে নিত্যপন্যের দাম উঠানামা করার কোন সুযোগ নেই। ঢাকা চট্টগ্রামের ব্যবসায়িরা যতক্ষন দাম না বাড়াবে ততক্ষন সারা দেশে কোথাও নিত্যপন্যের দাম বাড়ে না। অবশ্য রজমান মাসের দিকে সড়কে যানযট বাড়ে। ফলে পন্য আনা নেওয়ার খরচ বেড়ে যায়। এছাড়া লেবার থেকে শুরু করে সব কিছুর দামও বাড়তি থাকে। অনেক কারনে আসলে পন্যের দাম বাড়ে। এখনো অনেক পন্যের দাম বাড়ছে। সামনের দিনে আরো বাড়তে পারে।
এদিকে কক্সবাজার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক খাজা নাজিম উদ্দিন বলেন, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি মাসের ১৬ বা ১৭ মে পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে। তিনি বলেন, রমজান মাস হচ্ছে আল্লাহ তালার রহমতের মাস, পবিত্র কোরআন নাজিলের মাস এই মাসে মুসলামানদের প্রধান কাজ হচ্ছে ইবাদত করা। হালালভাবে ব্যবসা করা সেটাও একটি ইবাদত। সেখানে যদি অতিরিক্ত লাভের আশায় কোন মুসলামানকে কষ্ট দেওয়া হয় তাহলে তার জন্য অনেক গুনাহ হবে। তাই সংযমই হতে হবে সব মুসলমানের প্রধান লক্ষ্য।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ মাহিদুর রহমান বলেন, রমজান মাসে যাতে নিত্যপন্যের দাম স্বাভাবিক থাকে সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক নজরদারী থাকবে। এ জন্য ইতি মধ্যে অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পাঠকের মতামত: